দোফসলি

বন্ধা মাটির বুক জুড়ে কাস্তে লাঙ্গলের দাপাদাপি নতুন কিছু  সৃষ্টির আশায় লড়ে যাওয়া প্রকৃতি কখনো আসে সফলতা কখনো বা বিফলে শ্রম কভু আসে সোনালি ফসলের আলোকোজ্জ্বল ঝলকানি কভুবা এক বুক হাহাকার আর জমাট বাঁধা কান্না দশ মাস দশ দিনের প্রতিক্ষাতে সর্বংসহা নারীর মত যে আজন্ম লালিত কষ্টকে বুকে নিয়ে নতুন সুর্যকে পৃথিবীতে আনয়নের প্রতিক্ষাতে কখনো সফলতা বা বয়ে আসা ব্যর্থতা এ যেন সেই সর্বংসহা ধরিত্রীর মুখ বুজে স্বীকার করে নেওয়া যন্ত্রণাকে আগামীর আলোকে উদ্ভাসিত এক নতুন পৃথিবীর জন্য।। Parichay Kunduজন্ম ১০ ভাদ্র ১৩৭৬ (২৭ শে অগস্ট ১৯৬৬) বেথুয়াডহরী, নদীয়া ইন্ডিয়া।…

Read More

হানিমুন

আজও ওরা পাহাড়ের বেশ কিছু সুন্দর জায়গা দেখে সন্ধেবেলা হোটেলে ফিরলো। সেই সৌম্যদর্শন বৃদ্ধ লবিতে বসেছিলেন,বললেন“এই যে কেমন ঘুরলে তোমরা ? এই দক্ষিণের ট্রাইবাল ভিলেজটা তোমরা একবার দেখতে যেতে পার – – -” ঘরে ফিরে রীমা বললো “দেখো ঐ বুড়োকে এড়িয়ে চল, নইলে দেখবে রোজ জ্বালাবে। ” সুমন ওকে কাছে টেনে নিয়ে বলল, ”ছাড়োতো ওসব কথা , এবার একটু – – -” তৃতীয় দিন ওরা অনিচ্ছা সত্তেও সেই বৃদ্ধের রুমে গেল। ৫০তম বিবাহবার্ষিকী , বারবার বলেছিলেন। সারাঘরে ৫০টা মোমবাতি জ্বলছে, প্রচুর ফুলে সাজানো , একদিকে ধুপবাতি জ্বলছে। একটা গরদের শাড়ী…

Read More

বকশিশ

ব্যাঙ্কে একটা চেক জমা দিয়ে বেরুনোর সময় নন্দলালবাবুর নজরে এল, একটা স্লিপ হাতে এক বয়স্কা ভদ্রমহিলা একে ওকে কী যেন অনুরোধ করছেন। সকলেই তাকে এড়িয়ে চলে যাচ্ছে। নন্দলালবাবু ওনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কী ব্যাপার? -এই দেখ না বাবা, আমি কিছু টাকা তুলব।, কিন্তু, কাউকে দিয়ে লেখাতে পারছি না। নন্দলালবাবু হাত ঘড়িটা দেখে নিয়ে বললেন, ঠিক আছে আসুন আমার সঙ্গে, আমি না হয় লিখে দিচ্ছি। ফাঁকা একটা টেবিলে বসে নন্দলালবাবু পাশবই আর স্লিপটা ওনার কাছ থেকে নিয়ে বললেন, কত টাকা তুলবেন? -সাত হাজার টাকা, বাবা। স্লিপটা পূরণ করে ভদ্রমহিলাকে বললেন, নিন, এখানে…

Read More

অজ্ঞাত

বৃষ্টিভেজা ট্রামলাইন জানে আমার স্মৃতিমেদুরতা দেওয়ালের ফাটল জানে আমার নীরবতা পার্কের বেঞ্চ জানে আমার কথকতা গম্ভীর কার্নিশ জানে আমার ভাঙাগড়া মাতাল হাওয়া জানে আমার দীর্ঘশ্বাস রাতের তারা জানে আমার উন্মাদনা খোদাই জানে বিচিত্র খোদকারি |   Manjish RayI am a student I try to express myself through my pen.More Posts

Read More

চিঠি

গভীর রাতে গোটা কলকাতা নিঝুম  ঘুমে গড়িয়ে গেল।জোড়াসাঁকোর সদরের গ্যাসের আলো গুলিও ঘুমোল বোধ হয়।  আমি চুপিচুপি উঠে তখন তোমার  চিঠি পড়েছি।  বেলি ঘুমোচ্ছে ধরো আর শিয়রের জানলা দিয়ে একটু খানি চাঁদ আলো অনেক  খানি দখিন বাতাস  নিয়ে ঢুকে পড়লো ঘরে—ম্রিয়মাণ সেজের বাতি একটু কেঁপে নিভে গেল কেমন,আমি তখন স্পর্শ  দিয়ে তোমার  লেখা পড়ি। একটু একটু করে ছুঁয়ে ফেলি তোমার  মান অভিমান  আটপৌরে সংসার  ভাবনা —মনে হয় পদ্মা পার থেকে বেলির বাবা এসে আমাদের ঠিক পাশটিতে বসেছেন। তোমার  শরীর গন্ধ,আর দৃঢ়তর কাঁধ থেকে নেমে আসা কোমল বাহু আমাকে ছুঁয়ে দিল…

Read More

লাল তিতির

তিতলি আসতে আসতে মায়ের হাত টা সরিয়ে পা টিপে টিপে এসে দরজার কোণে বালতিটা উপুর করে রাখলো    ……….. তারপর ওটার ওপর উঠে দু’পা উঁচু করে সদর দরজার ছিটকিনিটা খুলেই দে ছুট….. আজ আসবে বলেছে লাল তিতির …… খুব দেরি হয়ে গেলো  … “তিতির কি অপেক্ষা করছে ওর জন্য !  নাকি ফিরে চলেই গেলো ! চলে যাবে !” বুক টা মোচর দিয়ে উঠলো তিতলি র ….সত্যি যদি লাল তিতির চলেযায় !! তিতির নাম টা তিতলি ই দিয়েছে ওকে ….তিতলি র ভালো লাগে ওকে এইনাম এ ডাকতে …. এটা একান্তই ওর দেওয়া নাম ….ওর সব চেয়ে কাছের বন্ধুকে… কেউ বিশ্বাস ই করতে চায়না লাল তিতির ওর সাথে কথা বলে …লাল তিতির আর তিতলি খুব ভালো বন্ধু ….. মা তো রোজ বকে ওকে , তিতলি কেন যে মা কে বোঝাতেই পারে না …!! রোজ নাকি ঘুমোতেই হবে …. বোঝে না লাল তিতির ওরজন্যই শুধু অপেক্ষা করে বসে থাকে বাগানের শেষ প্রান্তে …. পা চালিয়ে ছোটে তিতলি…..বাগানের ঘাসে পা রাখতেই রঙ্গন ফুলের গাছ টা তে তিতলি দেখতে পেল লালতিতির কে … ফুলের সাথে মিশে লুকিয়ে ছিলো ….. তিতলি কাছে যেতেই লালতিতির উড়ে এসে বসলো ওর হাতের    আঙুলে ….. রোজের মতো তিতলি হাত টা আসতে আসতে চোখের সামনে নিয়ে আসলো  … আর বললো …. “ভালো আছো লাল তিতির ? “তিতির ও রোজের মতো ফরফর করে উড়ে একবার ওকে চক্কর কেটেআবার এসে বসলো আঙুলে …..এই ভাবেই এককথা দুকথা …….জমে ওঠে ৮ বছরের তিতলি র সাথে লাল ফড়িং এর বন্ধুত্ব …..আর ছেলেবেলার গান ……সাঁঝ ঘনিয়ে আসে….. “তিতলি …. সোনা মা আমার …. ওঠো ওঠো ….. সন্ধ্যা লেগে গেছে …. চলো পড়তে বসতে হবে …. আজ অনেক হোমওয়ার্ক আছে … আর গানের রেওয়াজ টাও আজ করতে হবে …. আঁকার দিদির হোমওয়ার্ক ফিনিশ করেছ তো ! এই উইক এ আঁকার পরীক্ষা আছে কিন্তু ….চলো চলো …. উঠে পড় ….”মায়ের একনাগারে কথাগুলো যেন রেলগাড়ির মত  ঝমাঝম করে এলো আবার মিলিয়ে গেল ……সঙ্গে নিয়ে গেলো লাল তিতির কেও ….. তিতলি র চোখে ঘুম….আর লাল তিতিরের স্বপ্ন … হাতে পেনসিল আর হারানো শৈশবে বেড়ে ওঠা কঠোর বাস্তব …..   Suparna Pradhanআমি সুপর্ণা প্রধান । পশ্চিমবঙ্গের এক মফঃস্বলে (কৃষ্ণনগর ) ১৯৭৮ সালের ৯ ই মে আমার জন্ম । ডিপ্লোমা ইন্জিনীয়ারীং করলেও চাকরীতে মন ছিলো না কখনই । পরিবার…

Read More

ভালবাসার অবশেষে

মনের দোলাচল ভালোবাসার আকাশে আবেগের ঝর্না নিঃশব্দে ঝরে চলে, নয়ন দুয়ারে ভালবাসার বালুচরে, একাকীত্বের চোরাবালি স্বপ্ন ভাঙ্গার জোয়ারে জীবন আজ সাদাকালো,শূন্য, শুকানো বাগানের মালি পশ্চিম আকাশে জীবন সূর্য্যির অস্তাচলের গোধূলি তবুও আজও তুমি ওই আকাশের ধ্রুবতারা আমার জীবন-সূর্য্যি অস্ত যাক বা নাই বা যাক তোমার ভালোবাসার চাঁদ সেই আকাশে চির বর্তমান চিরনিদ্রায় যাবে জীবন যেদিন, একটাই ভাবনার অবশেষ স্বপ্নে শুধু তুমি এসো সেদিন হয়তো কখনও বৃষ্টি যদি আসে ভেবে নিও ওই পবিত্র ধারায় আছি আমি কখনও শান্ত সকালের কোমল রৌদ্র তোমায় কষ্ট দেয় অনুভব করবে ওই সোনালী কিরনে আমার উপস্থিতি…

Read More

ইনগ্রিড

সোমদত্তার ভার্না শেষ বাঁক টা পেরোতেই, এক ঝাক ভুট্টা হলুদ বদ্রী আকাশ কাঁপিয়ে উড়ে গেলো। অদ্ভূত শান্ত চারিদিক, কে বলবে সিলারি গাঁও যাওয়ার পথে দিন দুয়েক আগেও কি বেগ পেতে হয়েছে তাকে। ছিমছাম ‘ থার্স্টি ‘ তে ঢুকে, উরুন কে টুকটাক ব্যাবসায়ীক হালচাল জিজ্ঞেস করে, সোজা নিজের কেবিন কাম প্রাইভেট চেম্বারে চলে গেলো সে। শেষ চারদিন তার অমানুষিক পরিশ্রম গেলো, তবে শ্রান্তিতেও স্বস্তি পাচ্ছে সে। আর তার অন্ধকার অতীত পিছু ধাওয়া করবে না, আর তাকে কালিমালিপ্ত হতে হবে না। শুধু মাঝেমধ্যে একজোড়া করুণ চোখ ভেসে উঠছে মনে। সত্যি, শয়তান ও…

Read More

দৃশ্যান্তর

আজ কলেজে নবীন বরণ। চারিদিকে সাজো সাজো রব। শেষ বারের মত ঝালিয়ে নিচ্ছে নিজেদের ভুমিকা। সন্ধ্যে হলেই শুরু হবে অনুষ্ঠান। নতুনদের মধ্যেও অন্যরকম এক উন্মাদনা। এক ঝাঁক প্রজাপতির মত ঝলমলে সাজগোজে যেন চারদিক মাতিয়ে চলেছে সকলে। শুরু হয়ে গেল অনুষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে। উদ্বোধনী সংগীতের পর হবে নাটক,  দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনায়।সামনের সারিতে বসে মন কাড়ে নাটকের এক বিশেষ চরিত্র, বিক্রম। অবাক নয়নে দেখে চলে অভিনয়ের খুঁটিনাটি। সমস্ত অভিব্যক্তির স্বাদ নিজের মধ্যে গ্রহণ করে চলেছে।  মায়াবী আলোয় যেন অপরুপ। স্বপ্নমায়ায় জড়িয়ে গেছে মন। হঠাৎ আলো জ্বলে উঠতে সম্বিত ফিরে পায়। অনুষ্ঠান শেষে…

Read More