প্রথমবার ওই আগুনের স্পর্শের সাথে আলাপ বে-পাড়ার এক শ্মশান ঘাটে , তারপর অবশ্য খুব কাছে দেখার সুযোগ আসে , সেটা ২০০৮, বারাণসী ঘাট ! হরিশচন্দ্র ঘাট , ছোটবেলায় আমরা বইতে পড়েছিলাম ‘The Burning Ghat’ এর গল্প , চাক্ষুস দেখার খিদেটা যদিও তখন থেকেই , টিভিতে কতবার দেখেছি কাঠ দিয়ে সাজানো বিছানার ওপর সাদা চাদর পাতা তার ওপরই একটা অসাড় দেহ , জাগতিক সব বিষয় থেকে দূরে বহুদূরে , নেই কোনো অনুভূতি ! আর তার চারপাশে কান্নার রোল ….
হঠাৎ একটা আগুনের প্রবেশ অদ্ভুত থমথমে , কাঠের বিছানার একদম নিচ প্রান্তে ছোঁয়ানো হলো , চার কোনায় ছোঁয়ানোর পর অসাড় শরীরটা দাউদাউ করে জ্বলতে লাগলো , সাথে একটা গন্ধ আর সারা শরীর অবশ হয়ে আশা একটা তাপ। যদিও এসবের সাথে আমার আলাদা একটা পাওনাও ছিল একটা আনন্দ , মুক্তির আনন্দ।
এতদিনের জরাজীর্ণ পৃথিবীর বাইরে বেরিয়ে এক অদ্ভুত শান্তি , তৃপ্তি।
আগুন কেবলই পোড়ায় ? আগুনই কিন্তু মানুষকে দেয় মুক্তির স্বাদ , নতুন কিছুকে পাওয়ার আনন্দ সঙ্গে থাকে হয়তো বা হারানোর দুঃখ টাও। তবু বলবো আগুন ভালো , নিমেষে ছড়িয়ে পরে সারা শরীরে , জ্বালা , একটু শব্দ তারপরেই অবশিষ্ট খানিক ছাই। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই একটা জলজ্যান্ত জীবিত গল্পের মৃত্যুর সাক্ষী একমাত্র আগুন।
শুরুতে আগুন , ঠিক তেমনি শেষ পর্বেও আগুনেরই সহায় হই আমরা ! যজ্ঞ -এর ইন্ধন আগুন আবার শেষ যাত্রায় শব দেহের মুক্তিতেও আগুন !