ঠান্ডা-গরম

আপনাদের কার কার গরম খাওয়ার বাতিক আছে শুনি? না, ঠান্ডা করকরে ভাত, কি নেতিয়ে চিমসে যাওয়া টোস্ট খেতে মোটেই বলছি নে, ও আবার কারো ভাল্লাগে না কি? কিন্তু এমন অনেকেই আছেন না, যাঁদের খাদ্য বা পানীয়, বাঞ্ছিত উষ্ণতার থেকে সামান্য, অতি সামান্য, রতি মাত্র কমে গেলেই মুখ ভার, কান কটকট, পেটে ডিফার‍্যানশ্যাল ক্যালকুলাস ইত্যাদি হয়?এঁরা মহান লোক মশাই।এঁরা অক্লেশে আগুন-গরম ফিশফ্রাই তে প্যাকম্যানের মত হাঁ করে কামড় বসান, ফুটন্ত স্যুপ সুড়ুৎ করে গলা দিয়ে গলিয়ে ফেলেন, কড়াই থেকে সটাং পাতে আসা ফুলকো লুচিকে ফুস্করে দিতে গিয়ে এঁদের চম্পকাঙ্গুলিতে একটুও ফোস্কা…

Read More

স্বীকৃতি

ফোনটা হাতে নিয়ে কন্ট্যাক্টলিস্টে শুধু একটা নামকে দেখেই সময় কাটে অমিতের। মানে যখন খুব একা লাগে, ও দেখেছে, নামটা দেখলেই ওর বেশ একটা ভাললাগতে শুরু করে। মাঝে মাঝে এরমটাও হয়েছে, নামটা দেখছে…আর ঐ নামটা থেকেই ফোন এসেছে। ফোনটা বেজে যায়…. হ্যাঁ, বেজে যায়, অমিত ফোনটা ধরে না …. চোখের সামনে বাজতে বাজতে ফোনটা থেমে যায়; অমিত বিধাতাকে ধন্যবাদ জানায়; ফোনটা আসে ….মাসে একবার, দুমাসে একবার, তিনমাসে একবার। আসে, বেজে যায়। কিন্তু আসবেই। সে এখনো মনে রাখে তাকে, ভোলে নি। অমিত জানে, ভুলবেও না। ************************************************ সবাই এসে গেছে, ঐ হতচ্ছাড়া গৌরবটার…

Read More

শুভদৃষ্টি

এখনও পাশের বাড়ির থেকে শাঁখ আর উলুর আওয়াজ আসছে ।পিউ-এর বিয়ে হয়ে গেল কিংশুকের সাথে ।কিংশুক নাম করা ডাক্তার ।পিউ যথেষ্ট সুন্দরী ।অরুনাভ বোঝে সব ।তবু আজকের দিনে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে ।কোন ছোট্টবেলা থেকে পিউ আর অরুনাভ-এর প্রেম ।সবাই জানতো, ওদের বিয়ে হবেই ।সব কিছু ঠিক থাকলে হয়তো আজ পিউ-এর সাথে কিংশুকের বদলে অরুনাভ-এর বিয়ে হত ।কিন্তু………… অন্ধকার ছাদে একলা বসে আছে অরুনাভ ।ওদের ছাদ আর পিউ-দের ছাদ লাগোয়া ।সেই কোন আমলে কাঠের সেতু তৈরি করেছিল অরুনাভ ছাদে ছাদে ওবাড়ি যাওয়ার জন্য, আজও সেই সেতুটা রয়ে গেছে ।শুধু মাত্র অরুনাভ…

Read More

মৃত্যু

বদলবাবু আজও একটা স্কচ হাতে নিয়ে বারান্দায় বসে চিন্তা করেন সেই দিনগুলোর কথা। শিকারের আনন্দ তিনি ভুলতে পারেন না, একটা জন্তু কে মেরে ফেলার আনন্দ যে কি, তা বলে বোঝানো যায় না। জন্তু, মানে যাদের বুদ্ধি কম , যারা কোনো কিছু করার আগে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। ওরা আবেগ সর্বস্য। বদলবাবু কারোর মৃত্যুর জন্য দায়ী নন। তিনি মনে করেন, তিনি কাঊকে হত্যা করেন নি , বরং মৃত্যুর মত একটি অমূল্য উপহার দিয়েছেন মাত্র। জন্তুটা বেঁচে থেকেই বা কি করত ? বদলবাবু মোটেও নিষ্ঠুর নন , তিনি তাঁর সংসার ও একমাত্র…

Read More

আফসোস

জীবন সব সময় , সময় দেয় না। রিম্পা ছোট থেকেই বাবার থেকে কাকার বেশি কাছের ছিল । বাবা যেহেতু ব্যবসা নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকত , তাই সব আদর আবদার মেটাত ওর কাকা। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে কাকার কাছে চলে যেত।তারপর ব্রাশ করান , খাওয়ান , স্কুলে পৌঁচ্ছে দেওয়া , সর্বস্ব কাকার দায়িত্ব। কাকার একটা স্কুটার ছিল , আর সেই স্কুটারে সব সময় সামনে দাঁড়িয়ে যেত ও। কোন এক অজানা কারনে স্কুটারের পিছনে বসতে রিম্পার খুব ভয় করত। হয়ত রিম্পার মনে হত কেউ যদি পেছন থেকে তুলে নেয় ওকে, কাকা…

Read More

জিন্দেগী

প্রতিদিন রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবি; ঘটনাটা ঠিক কি ঘটছে…. কি ঘটতে চলেছে….  অফিস ফেরত বাজার করে নিয়ে এসেই আমার দায়িত্ব শেষ – বাদবাকিটা মা-ই সামলে নেয়। আমার তখন পুরোটাই “মী টাইম”; বই পড়ি, ম্যাগাজিন পড়ি, ইউটিউব খুলে পছন্দমত ভিডিও দেখি, মাঝে মাঝে অনেকদিন না কথা হওয়া বন্ধুগুলোকে ফোন করি…সময়টা বেশ ভালই কাটে। আমি আর মা রাতে একসাথে খাই, সেইসময়টাতেই আমার টিভির সাথে যা সম্পর্ক- তারপর নিশ্চিন্তের ঘুম। এইরকম বেশ ছকে বাঁধা একটা নির্ঝঞ্ঝাট জীবন ছিল আমার। ইদানীং, মানে মাস চারেক, বড্ড বেশী ভাবছি, হ্যাঁ; ভাবনাটা বেশ বেশী রকমই হচ্ছে…আর একটা…

Read More

শাড়ি

আমার বন্ধুমহলে বেশ কিছু অলোকসামান্য সুন্দরী আছেন, যাঁদের শাড়ির ভাণ্ডার তাঁদের নিজেদের চেয়েও বহুগুণ বেশি চোখ ঝলসানো। এমন টপিক নিয়ে তাঁদের লেখার কথা বুঝলেন, আমি এ বাবদ নেহাত অজ্ঞ বললেও কম বলা হয়। এই সেদিন কোন এক শাড়ির পরিচয় দিতে গিয়ে ভ্যাবলার মত বলে ফেললুম ‘রেশম সিল্ক’। যাঁকে বলছিলুম সেই দিদিটি এদ্দিনে আমার সুনির্মল চিত্তের বিলক্ষণ পরিচয় পেয়েছেন, দিলেন এক ‘মনে হাসি গলায় রাগ’ মার্কা ধমক, “রেশম আবার সিল্ক কি রে হতচ্ছাড়ী, রেশমকেই সিল্ক বলে, আর সিল্ক মানেই রেশম। তোর মত জংলীকে বল্কল পরিয়ে ছেড়ে দিলেই ঠিক মানাত, ওই চান্দেরী…

Read More

হেমলক

গত বছর শীতের শেষ হয়ে বসন্ত আসি আসি করছে – এমন একটা পড়ন্ত দুপুরের দিকে অপরাজিতার বাড়িতে বেহায়া কোকিলের মতো একটানা ল্যান্ডফোনটা বেজেই যাচ্ছিল ।মধ্যবয়সী মহিলাটি বাড়িতে একা – আলগা ভাতঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন ।চমক ভেঙে পড়িমড়ি করে ফোনটা ধরতেই অচেনা এক কণ্ঠ ঘোষণা করেছিল নিতান্ত এক দুঃসংবাদ ।অপরাজিতা দাশগুপ্ত পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম অবস্থায় রিকভার নার্সিংহোমে অ্যাভমিটেড ।বলাই বাহুল্য, মধ্যবয়সী মহিলাটি অপরাজিতা দাশগুপ্তের মা ।তারপর….. ?!!! তারপর নার্সিংহোমে পৌঁছে দেখা গেল অপরাজিতা তখনও সেন্সলেস ।মাথায় আঘাত গুরুতর ।রক্ত দিতে হয়েছে ।জীবনের আশঙ্কা নেই । কে এই দেবদূত – যিনি দুর্ঘটনাস্থল…

Read More

শেষ থেকে শুরু

বৃষ্টি অফিসের কাজে দিল্লী গেছে কিন্তু দিল্লীতে যাওয়ার ইচ্ছে তার ঠিক ছিল না। যেহেতু সে দিল্লীর মেয়ে তাই জায়গাটাও তার পরিচিত বলে অফিস থেকে তাকেই পাঠানো হয়েছে। দিল্লীর নেহেরু প্লেসের এক অফিসে কাজ আছে তাই লাজপত নগরের বিক্রম হোটেলেই অফিস থেকে বুকিং করে দিয়েছে। (১) বৃষ্টির জন্ম ও পড়াশুনা দিল্লীতেই, তাই দিল্লীর রাস্তা ঘাট ওর কাছে খুব পরিচিত। দিল্লীর লোকেদের নার্ভও ওর ভাল ভাবে জানা। মনে পরে যায় সেই ছেলেবেলার কথা। বাবা, মা-র হাত ধরে ছুটির দিনে ইণ্ডিয়া গেটের সামনে বেড়াতে যাওয়া, মনে পরে সেই দিনগুলো যখন লোদী গার্ডেনের বা…

Read More

হারিয়ে পাওয়া

লাল পাহাড়ের চূড়ার রোদ্দুর মাখা মেঘের দিকে অপলকে তাকিয়ে ছিল ধিতাং।কাল মহালয়া।বাড়িতে থাকলে এই সময় কত হইহই ।মা, কাকীমার সাথে হাজার দোকান ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা, ফেরার পথে ফুচকা খাওয়া-মজাই আলাদা।টিকলি তো দিদিভাই ছাড়া কিছু জানতো না, কে জানে এখন টিকলি দিদিভাইকে আর আগের মতো ভালোবাসে কিনা ।উঁহু, বাসবে না ।কেউই তো আর ধিতাংকে ভালোবাসে না ।সবার চোখে ধিতাং খুনি হয়ে গেছে ।জলে ভরে আসে ধিতাং-এর চোখে । ফেসবুক খুলে বসে ধিতাং ।এই ফেসবুকের বন্ধুরাই তো তার জীবনের একমাত্র জানলা, যা দিয়ে তবু কিছু আলো আসে ।পুরোনো ছবিগুলো দেখে মাঝে মাঝে…

Read More
Page 2 of 8
1 2 3 4 8