বিবাহ বার্ষিকী

অনেক চেস্টা করেও দীনেন আটকাতে পারলোনা । ছোটো মেয়ে সঞ্চারী আশাপূর্ণাকে নিজের কাছে নিয়ে গেল । বললো ,“মার একটু বিশ্রাম দরকার ,আমার কাছে মাসখানেক থাকবে । ” কিন্তু গেলে কী হবে ? সকাল বিকেল দীনেন ফোন করতে লাগল কখন ওর প্রেসারের ওসুধ , কখন ডাইবেটিসের ওসূুধ আশাকে দিতে হবে । ওরা যেন ঐ পিজা বা পাস্তা ওকে না খাওয়ায় । ওর পাতলা ঝোলভাত খাওয়াই ভালো ।
১৬ দিনের মাথায় , সবাইকে অবাক্ করে দীনেন মাঝরাতে মেয়ের বাড়িতে পৌছে গেল । সঞ্চারী বললো ,“বাবা তুমি মাকে ছেড়ে একদম থাকতে পারো না —”

ঘরের দরজা বন্ধ করে দীনেন আশাকে টেনে মেঝেতে বসালো । বললো ,“কী করে যে এসেছি । ট্রেনে রিজার্ভেসন নেই , গার্ড পুলিসে দেবে বলছিল । ”
“বেশ হত , তোমার জেলে যাওয়াই উচিত । এভাবে কেউ আসে !”
“তারপর বদলের ট্রেন চলে গেছে তখন একটা ট্রাকের ওপর বসে তবে এলাম । না এলে চলে ? আজ যে আমাদের বিবাহ বার্ষিকী গো —”
দীনেন ব্যাগ থেকে চুপি চুপি কেক বার করল । মোমবাতি জ্বালালো , গন্ধধূপ লাগালো । তারপর একটি ইমিটেশন ডায়মন্ডের হার বার করে ওকে পরিয়ে দিল । তারপর ওরা ফিস্ ফিস্ করে বললো , “ হ্যাপি এ্যানিভার্সারি । ”
দীনেন ওর কোলে মাথা রেখে শুয়ে বললো , “ মনে আছে সেবার বাড়িতে অনেক লোক , বৌদিকে বলে ওঁর ঘরে আমরা ঢুকলাম লুকিয়ে । বৌদি বাইরে থেকে খিল লাগিয়ে দিল । হঠাৎ জেঠিমা ঘরে ঢুকে চালের টিন খুজতে আমাদের খাটের নীচ থেকে টেনে বার করলেন । ”
ওর দুজনে হাসতে লাগল ।
আশা বললো , “আমি তখন কোথায় লুকোবো খূঁজে পাইনা । কী লজ্জা , কী লজ্জা !” ও দুহাতে মুখ ঢাকলো ।

Anniversary-Roses-blog-size

Avatar

Shivaji Sanyal

শিবাজী সান্যাল একটি বহুজাতিক বানিজ্যিক সংস্থায় দক্ষিণ এশিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ইদানিং অবসর নিয়েছেন । সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে জড়িত আছেন দীর্ঘদিন থেকে । নাটকে বিভিন্ন সর্বভারতীয় প্রতিযোগীতায় পুরস্কৃত হয়েছেন । তিনি নিয়মিত গল্প কবিতা লেখেন, সেই সঙ্গে জড়িত আছেন অভিনয় (হিন্দী ছবি, নাটক),মডেলিং এবং ভয়েসিং এর কাজে । একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে । থাকেন মুম্বাইয়ে । হাসিখুশির জীবন ও নানা সামাজিক আর সাংস্কৃতিক কাজে ব্যস্ত থাকতে ভালবাসেন ।

More Posts

Related posts

Leave a Comment