সকাল থেকে সুরমার মাথা ধরে আছে।কত কাজ , কী করে একা হাতে সব সামলাবে কে জানে ! বাড়ি ভর্তি লোক ,তাদের জলখাবারের ব্যবস্থা করা , পুলুর গায়ে হলুদের সমস্ত জোগার করা, সব দায়িত্ব সুরমার । সুদেব শুধু চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বাড়ি মাত করবে আর ফোড়ন কাটবে , এটা হল না , ওটা হল না , ব্যস তার কাজ শেষ। সেই বিয়ের পর থেকে আজ প্রায় চল্লিশ বছর ধরে দেখে আসছে , লোকটা একটুও পাল্টালো না।কোনও কাজই দায়িত্ব নিয়ে একা করতে পারে না , শুধু ছাত্র পড়ান ছাড়া ।পাড়ার নাম করা অঙ্কের…
Read MoreAuthor: Jhumpa Dey Kundu
সফটি
সকাল থেকে সফটি ব্যস্ত, বাড়িতে অনেক কাজ আর মহিলা বলতে ও একা ।স্কুলেও যাচ্ছে না কদিন ধরে। পুরহিত মশাই আসার আগে সব জোগার জাতি করে ফেলতে হবে।আজ মানির শ্রাদ্ধ। মানি ওর ঠাকুমা।জ্ঞান হবার পর থেকেই সফটি দেখে আসছে মানিই ওর সব। খাওয়ানো ,স্নান করানো, ঘুম পারানো, স্কুলের বাসে তুলে দেওয়া সব ,নাচের শিক্ষিকা খোঁজা ,সব কিছুতে মানি ।কত অত্যাচার না করেছে মানির ওপর, সব মুখ বুজে সহ্য করত মানি। বাবা মার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় যখন , তখন সফটির মাত্র ২বছর বয়স , এক আয়া মাসি ছিল আর ভরসা ছিল মানি।…
Read Moreআফসোস
জীবন সব সময় , সময় দেয় না। রিম্পা ছোট থেকেই বাবার থেকে কাকার বেশি কাছের ছিল । বাবা যেহেতু ব্যবসা নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকত , তাই সব আদর আবদার মেটাত ওর কাকা। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে কাকার কাছে চলে যেত।তারপর ব্রাশ করান , খাওয়ান , স্কুলে পৌঁচ্ছে দেওয়া , সর্বস্ব কাকার দায়িত্ব। কাকার একটা স্কুটার ছিল , আর সেই স্কুটারে সব সময় সামনে দাঁড়িয়ে যেত ও। কোন এক অজানা কারনে স্কুটারের পিছনে বসতে রিম্পার খুব ভয় করত। হয়ত রিম্পার মনে হত কেউ যদি পেছন থেকে তুলে নেয় ওকে, কাকা…
Read Moreওরা-আমরা
আমরা যখন বড়ো হচ্ছিলাম, তখন প্রায়শই চারিদিকে ঘটি আর বাঙালদের বাক্ যুদ্ধ শুনতে পেতাম।এখন তো সে সব অতীত।এখন ঘরে ঘরে বাটিদের বাস।আমরা ছিলাম শুদ্ধ ঘটি, বাড়িতে প্রায়ই একটা কথা শুনতে পেতাম, “ওরা তো বাঙাল, ওদের কথা বাদ দে তো!” কিন্তু কেন যে বাদ দেবো , সেটা বুঝতাম না। সল্টলেকে আমার জন্ম না হলেও মোটামুটি জ্ঞান হওয়া থেকে ওখানেই থাকি,আমাদের আশপাশের প্রায় সবাই বাঙাল, পাড়ার বন্ধু, স্কুলের বন্ধুর বেশির ভাগই বাঙাল। যার ফলে অবচেতন মনে আমার বাঙাল প্রীতি তৈরি হয়ে গেছিল। চিরকালই আমি খুব খাদ্যরসিক মানুষ, যারা আমায় অল্প চেনে তারাও…
Read Moreসম্পর্ক
জিডি মার্কেটে ঢুকেই রুপসার মনটা আনন্দে নেচে উঠল,কে বলবে ও এক অষ্টাদশী কন্যার জননী! যেন সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া কোনও কিশোরি । ওষুধের দোকানের সামনে এসেই মাথাটা গরম হয়ে গেল,দোকান ভর্তি লোক ।প্রায় এক মাস হয়ে গেল দেখেনি ও দীপকে, ভেবেছিল একটু মন ভরে শুধু দেখবে! পনের মিনিট চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল এককোনে,ভিড়টা হাল্কা হতে মনটা একটু খুশি খুশি হল।”একপাতা অ্যালজোলাম দেখি”। দীপ চেনা গলা পেয়ে ক্যাশ গোছাতে গোছাতে জবাব দিল “প্রেশক্রিপশন ছাড়া দেওয়া যাবে না”। তারপর মুচকি হেসে চোখে চোখ রেখে যেন বলার চেষ্টা করল, “কী এমন কষ্ট তোর,যে ঘুমের…
Read More