বাংলা সাহিত্য ও ভাষার উৎকর্ষতা

সাহিত্যরসের উৎস সন্ধানের প্রতি অনুসন্ধিৎসা লইয়া জীবনের ক্ষণিক সময় অতিবাহিত করিয়া উপলব্ধি হইল যে ইহার মূলধন হইতে আমি বঞ্চিত। ত্রিধারায় বাহিত এই রসে স্নাত হইয়া অনাবিল আনন্দ উপভোগ করা এক আর ইহার উৎসে গিয়া সৃষ্টি জিনিসটি আরেক রকমের।যেকোনো সাহিত্যেই ইহার ধর্মের পরিবর্তন নাই। অন্তর্দৃষ্টি শক্তির উপলব্ধিকে লইয়া বাহিরের প্রকাশনা শক্তির মধ্য দিয়া সাহিত্য রচনায় ব্যস্ত লেখক সমাজ সাহিত্যসুলভ বহু রচনার সৃষ্টি করিয়া আসিয়াছেন।ইহাতে সাহিত্যের উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পায় নাই।অর্থাৎ সাহিত্যসুলভ রচনার বৃদ্ধিতে সাহিত্যের উৎকর্ষতা বারংবার মূলধনের অভাব বোধ করিয়াছে । ইহার অর্থ আমি কাহারো লেখনী শক্তি বিচারে বসি নাই আজ। বলিতে পারেন সাহিত্যকে দীর্ঘজীবী করিয়া কালের চক্রাবর্তে অমর থাকার রহস্যের সন্ধান করিতেছি মাত্র।

কবিগুরু বলিয়াছিলেন সমালোচনা মানবের দ্বারা নয়, মহাকালের দ্বারা   হইয়া থাকে।অর্থাৎ কিনা সাহিত্য কালজয়ী না হইয়া যেন কভু শুধুমাত্র তৎকালীন সমাজ বা জনগণের বাহবার খোরাক না হইয়া যায়। ইহাতে সাহিত্যের ক্ষতি হইবে অসীম। ত্রিবেণীর দুইটি ধারার কথা আমরা জানিয়াছি, অন্তর্দৃষ্টি ও বহিঃপ্রকাশের নির্দিষ্ট মিশ্রণ, এই দুইয়ে সাহিত্যসুলভ রচনা সম্ভব।আর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করিতে চাই লেখকের জীবনদর্শণ বোধ।যাহার অনুধাবনে সাহিত্যরসের ভাণ্ডার লইয়া উৎকর্ষতার শিখরে পৌঁছানো যাইবে।এই তিনের সঠিক মিশ্রণে সাহিত্য হইয়া উঠিতে পারে কালজয়ী।

ইহার প্রতিফলন লইয়া একটি পত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখিয়াছিলেন শরৎবাবুকে। কেন্দ্রে ছিল ষোড়শী।যদ্যপি ইহা শিশিরবাবু পরিচালনায় তৎকালীন সমাজে বহুল প্রশংসিত ও দর্শককুলের অসংখ্য অভিবাদন লাভ করিয়াছিল, তথাপি কবিগুরু ইহাকে শরৎসাহিত্যের মানদণ্ডে স্থান দিতে পারেন নাই বলিয়া আক্ষেপ করিয়াছিলেন। সেই ত্রিধারার প্রতিধ্বনির সংমিশ্রণ লইয়া তিনি সন্তুষ্ট হইতে পারেন নাই।

বাংলা সাহিত্য ও ভাষার উৎকর্ষতা কালক্রমে এমন ক্ষয়িষ্ণু, শীর্ণ দেহ লাভ করিবে ইহা ভাবিতে কষ্ট ও লজ্জা দুইই হয়।তথাপি রোগনিরাময়ের সর্বোচ্চ বাধা হইল মোহ।জনসমাজের অভিনন্দন ও সাময়িক সাফল্য লাভকে কুক্ষিগত করিয়া এমন মহৎকার্য সম্পন্ন করিতে আজ আমরা  বদ্ধপরিকর যে সাহিত্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সাহিত্যরসের উদ্রেক করিতে ব্যর্থ হইতেছি।মোহের গণ্ডি অতিক্রম করিয়া মহাকালকে সমালোচনার ভার দিবার ক্ষমতা হারাইয়াছি। এই গণ্ডী ছাড়াইয়া সাহিত্যরসের ব্যপ্তিলাভে আশা রাখিয়া আজিকার বক্তব্য সমাপ্ত করিতেছি।

Swarup Biswas

Swarup Biswas

ছোট্ট বেলায় সব্প্ন দেখে অবসর সময় কাটাতাম l কুঁড়ে মানুষ এর লক্ষণ তখন থেকেই প্রস্ফুটিত হয় l পরে ক্রমশ তা প্রকাশ পায় পরিচিত মহলে l আমার মধ্যে কাব্য চেতনা কেন নেই এই অভিযোগ আমার বহুদিনের l আকাশ কে আকাশ দেখি , জল ক জল দেখি , লাল কে লাল , নীল কে নীল l কোন রমণীর কেশের সথে আকাশের মেঘের তুলনায় যাওয়ার বা নদীর জলের মধ্যে প্রিয়তমার মুখ দেখার ক্ষমতা যে আমার নেই সে টের পেতে খুব বেশী সময় লাগেনি এ বলা বাহুল্য l কি লিখব ভাবতে ভাবতেই বেশীরভাগ চিন্তাভাবনা হারিয়ে যায় সময়ের স্রোতে , কিন্তু ভাবনা গুলো হয়ত কখন ফিরে ফিরে আসেই কোন এক অলস দুপুরে l দু চার লাইন লিখেও ফেলি মনের তাড়নায়, সে লেখারা হয়ত পরে থাকে কোন এক কোণে অবহেলায় l জয়তী দির এক প্রচেষ্টা, সাহিত্য এর প্রকারভেদ না রেখে একটা মঞ্চ তৈরী করার যেখানে আমদের মত অবহেলিত প্রাণীরাও ঠাঁই পাবে l শুনেই মনটা খুশি তে গদগদ , কিন্তু সঙ্গে লাগবে নিজের সম্পর্কে দু চার লাইন, উফফ কি জ্বালা বলুন তো মাইরিl বলি মশাই কি বাউন্ডুলে ছেলে দেখেছেন ? যদি দেখে থাকেন তাহলে আমায় চিনতে আপনার কোন অসুবিধে হবেনা l কোন উদ্দেশ্য নেই , কোন গন্তব্য নেই , হেঁটে চলেছি শালবীথির পথে l দূরে পলাশ বনে আগুন লেগেছে, আর আমার মন চলেছে রাঙ্গামাটির পথে , এঁকে বেঁকে l

More Posts

Related posts

Leave a Comment