স্বস্তি

একটু আগে কিছু প্রতিবাদী বুর্জোয়াসুলভ বিপ্লবী  হুমকির বার্তা সেঁটে গেছে লাল বেদীর ওপর, চলে গেছে তারা; তাঁদের হেঁটে যাওয়া পথে পড়ে রয়েছে আলগোছে ছুঁড়ে দেওয়া আদেশ- “ধর্মঘট সফল করুন;সফল করুন”, এরপর তারা আর হয়তো ফিরে আসবেনা । সে সু্যোগে opposition’ও ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে ক্ষান্ত হয়েছে কিছুটা। সবার সব গাজোয়ারি শেষ, এই মুহুর্তে ফাঁকা পড়ে রয়েছে শুধু সেই লাল বেদিটা। দুটো বেপরোয়া দেহাতি বাচ্চা এসে বসেছে তাতে, এবার তাদের আরাম করে দেড়পয়সার মালাই চেটেপুটে খাওয়ার পালা, যে’ই আসুক সে জায়গা করতে- একচুলও জায়গা ছাড়বেনা তারা। শুধু এটুকু স্বস্তি কাল আর…

Read More

রক্তবন্ধন

আজ জন ফিরে যাচ্ছে । এই দিয়ে ও তৃতীয়বার এসেছে এই ছোট্ট গ্রাম সুদামপুরে সুদূর আমেরিকা থেকে । জনার্দনের এখানে একটা ছোটো দোকান আছে । একমাত্র ছেলে রথীন্দ্রকে অনেক কষ্টে পড়াশোনা করিয়েছিল । তবে ও মেধাবী ছিল , পরিশ্রমী ছিল , সাইকেল করে স্কুল যেত , বৃত্তি পেতো ,তাই সবাই ওকে ভালবাসতো । তারপর শহরের কলেজে গেল , সেখানেও ভাল ফল করে কিভাবে যেন আমেরিকা চলে গেল । এরপর সামান্য যোগাযোগ রাখতো , মাঝেমধ্যে টাকা পাঠাতো আর শুধু একবার মাত্র এসেছিল । রথীন্দ্র ওখানে এক মেম বিয়ে করে । জন ওদের…

Read More

আজ হোলি খেলব শ্যাম

উতলিকা হাউজিং কমপ্লেক্সের চল্লিশতম তলার ব্যালকনিতে বসে শ্যামলবাবু অতীতে হারিয়ে গেলেন এক দোলের দিনে। এখনকার ছেলে-মেয়েরা তো দোল খেলতেই জানে না। মেজো মেয়ে অরূণিমা গত পরশু এসেছে। সঙ্গে এসেছে বারো বছরের নাতি পাপ্পু। আবিরের বাটিটা হাতে নিয়ে শ্যামলবাবু ডাকলেন পাপ্পুকে, এই পাপ্পু, আয় একটু কাছে, তোকে একটু রঙ মাখিয়ে দিই।সে তো কিছুতেই রঙ মাখতে চায় না। বলে, না দাদু রঙ দিও না, মা বকবেন, রঙ মাখলে শরীর খারাপ করবে। শ্যামলবাবুর মনে পড়ে যায় ছোট বেলার কথা। তখনকার দিনে মা বাবারা এমন ভাবে ছেলেমেয়েদের তুতুবুতু করে রাখতেন না। বেলা আটটা নটা…

Read More

রকেট

 এই যে সেদিন পুরোনো কবিতাটা মনে পড়েগেলো , “আই শ্যাল বি ব্যাক এগেইন জাস্ট বিসাইড দা প্যাডি স্টেয়ারস”। এটাও মনে পড়ে যায় যে, এটার সঙ্গে আমার চাঁদে রকেট পাঠানোর ও একটা সম্পর্ক ছিল। প্রফেসর শঙ্কুর মতো ডাইরীর ডেট উল্লেখ করে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু এটা বলতে পারি , প্রায় ৩০ বছর আগের ঘটনা তো হবেই, বসে আঁকো প্রতিযোগিতা হয়েছিল কোনো এক দূর্গা পুজোর প্যান্ডেলে। হিজি বিজি ছবি এঁকে প্রথম পুরস্কার নিয়ে এলাম ঘরে। একটা বড়োসড়ো বই – মহাকাশে মহামিলন। রাশিয়ানরা তখন মুড়ি মুড়কির মতো রকেট, কুকুর যা পারছে তাই ছুড়ছে…

Read More

একটু দেরী হয়ে গিয়েছিল

সখ ছিল তোর , এলো চুলে অস্তমিত সূর্যের আলো-আঁধারিতে দেখবি আমায় পশ্চিমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে তোর অপেক্ষায় …… পড়ন্ত বিকেলের সোনা রোদ যখন জানলার নীল কাঁচ ভেদ করে গায়ে এসে পড়ল মনে পড়ে গেল সে কথা ….. মনে পড়ে গেল – সূর্যোদয়ের রঙ গায়ে মেখে সমুদ্র সৈকত চলতে চলতে আমায় জানিয়ে ছিলি তোর ইচ্ছের কথা ……… বলেছিলালম – আজই নয় কেন  — সূর্যাস্তের বেলায় এসে দাঁড়াব এই সৈকতে – দেখবি দু-চোখ ভরে …… বলেছিলি না  — ঐ পশ্চিমের বারান্দা – সূর্যাস্ত আর সেই সময়ের এলো চুলে দাঁড়ানোই তোর চাই …… সময়ের…

Read More

সাহস

আমার দিদার মা নিভাননী ছিলেন অতি সাহসী মহিলা। ছয় ছেলেমেয়ে নিয়ে তার বিরাট সংসার, স্বামী থাকেন দূরে। তার ক্ষেত খামারে যে সব মুনিস, রাখাল, বাগাল সারাদিন ধরে কাজকর্ম করত, তারাই আবার সুযোগ বুঝে মালিকের বাড়ীতে চুরিও করত। একদিন, গরমের রাত। নিভাননী, তার শোবার আগে, সমস্ত ঘরগুলিতে নজরদারি চালিয়ে নিয়েছেন, সিঁড়ির কোণাগুলো, সিঁড়ির নীচে ইত্যাদি সব জায়গায়। তারপর উনি যখন অভ্যাস মত তার পা দুটো খাটের পাশে রাখা পাপোশে মুছে, ছোটো সিঁড়ি দিয়ে বিশাল উঁচু পালঙ্কে উঠতে যাবেন, দেখেন, আলনার জামা কাপড়ের আড়ালে ও খাটের পাশে একটা মিশকালো শুঁটকো লোক পিছন…

Read More
Page 9 of 9
1 7 8 9