দণ্ড-হিসেব !

girl_goa-india

রোজই চোখে পরে ওই মহিলা একটা মেয়ে কোলে ফুটপাতে হাত পেতে বসে আছেন ! আজ হটাৎ-ই দেখলাম যথারীতি ওই মহিলা তাঁর বাচ্ছা মেয়েটি ছাড়াও পাশেই পরে রয়েছে একটা সদ্যজাত ! তারস্বরে কেঁদেই চলেছে , আর পাশে বসে নিঃশব্দে চোখের জল ফেলছেন, ওই মহিলাটি ! কিছুটা এগিয়ে শুনলাম মহিলার স্বামী মেয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য তাঁকে তাড়িয়ে দিয়ে নতুন সংসার পেতেছেন ! তারপর থেকেই ফুটপাতই ওনার আস্তানা ! বুকে অতো ছোট শিশু দেখে অনেকেরই দয়ার উপহারস্বরূপ কিছু পয়সা পেয়ে ঐ দিয়েই চালিয়ে নিচ্ছিলেন বেশ , শুনলাম ফুটপাত থেকে তাঁর কলকাতার চেনার অভিজ্ঞতা। সারাদিনে নানান প্রকার লোকজন দেখতে পান , কিছু ভালো কিছু মন্দ ! এইতো সেদিন ভালো দিদি (NGO দিদি) একটা ত্রিপল দিলো বলে ফুটপাতের একচিলতে আকাশও ঢাকা গেলো !বলতে বলতে খানিক চোখের কোণ ভিজলো মহিলার। বেশ কয়েকমাস আগে এক বৃষ্টির রাত , রাস্তায় লোকজন কম , একটা বাইক এসে দাঁড়ালো ত্রিপলের ছাদের সামনে , উনি ত্রিপল সরিয়ে দেখলেন একজন টলতে টলতে এগিয়ে আসছে ওনার দিকে ! মোমবাতিটা নেভানো খুব সোজা ছিল ,তার থেকেও পরের ঘটনাটা আন্দাজ করা ! ‘দন্ড হিসেব’ করে অবশ্য যথারীতি বেরিয়ে যায় বাইক !পরের বেশ কিছুদিন ওই মহিলা ত্রিপলের বাইরে বেরোতে পারেননি ! কাউকে জানাতে পারেনি দগদগে যোনি’র কথা ! খাবার হজম করার মতন হজম করে নিয়েছিলেন পুরো ঘটনাটা !

দিন পনেরো হলো প্রসব করেছেন তিনি , সাহায্য পাননি কারোর ! এবারের তা অবশ্য ‘পুত্র সন্তান’ ! হটাৎই খেয়াল পরে ,বলেন বড্ডো মাছি ওড়ে এখানে ! মহিলাটি বলতে থাকেন এইবার আমি বুঝতে পেরেছি কেন ওর বাবা (মহিলার স্বামী) আমায় বের করে দিলো ! মেয়ে জন্মালে এই ফুটপাতেই তো পিষে মরতে হবে , সে ইচ্ছে ই হোক কিংবা শরীর’ই হোক ! বেশ করেছে আমায় বের করে দিয়েছে বলে উঠলেন নিজেই।

গল্পটা হয়তো এরপর আরো একটা পাতা পেতে পারতো , যাতে অমন একটা ভালো দিদি থাকতো যারা সাহায্য করতো ওনাদের কিন্তু তারপর?
সাহায্যের হাত আসেনা নয় ! হয়তো আসে কখনো আবার আসেনা ! কিন্তু এই সাহায্যের জন্য আবশ্যিক একটা ‘ ঘটনা ‘ !

কে করবে এই ‘দন্ড/যোনি’ হিসেব ?

Avatar

Sathi Saha

লিখতে ভালোবাসি তাই লিখি।

More Posts

Related posts

Leave a Comment